A/B টেস্টিং, যা স্প্লিট টেস্টিং নামেও পরিচিত, একটি পরীক্ষামূলক পদ্ধতি যেখানে একটি ভেরিয়েবলের দুই বা ততোধিক সংস্করণ (ওয়েব পেজ, ওয়েবপেজের উপাদান যেমনঃ টেক্সট, ছবি, ইত্যাদি) একই সময়ে ওয়েবসাইট দর্শকদের বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে দেখানো হয় যাতে ব্যবসাতে কোন সংস্করণ থেকে বেশি লাভজনক ফলাফল আসে তা নির্ধারণ করা যায়।
A/B টেস্টিং আপনাকে সংশয় দূর করে ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশন বা সঠিক বিজ্ঞাপণ বাছাই করতে ডাটা নির্ভর সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। A/B টেস্টিং এর ক্ষেত্রে A কে “কন্ট্রোল” এবং B কে “ভেরিয়েশন” হিসেবে ধরা হয়।
যেই ভার্সন থেকে ব্যবসার তুলনামূলক বেশি ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায় তাকে চূড়ান্ত নির্বাচন করা হয় যাতে ভবিষ্যতে ওয়েবসাইট বা অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যবসাতে ROI (বিনিয়োগের রিটার্ন) বেশি আসে।
আসুন জেনে নেই যে সব কারণে আমরা A/B টেস্টিং ব্যবহার করতে পারি –
১। ভিজিটরদের পেইন পয়েন্ট সমস্যা সমাধানের জন্য
ওয়েবসাইটের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটররা আসেন। তারা হয়ত আপনার পণ্য বা পরিষেবা (সার্ভিস) সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে, একটি নির্দিষ্ট পণ্য কেনা, একটি নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে জানতে বা কেবল ব্রাউজ করতে ওয়েবসাইটে আসতে পারেন । দর্শকের লক্ষ্য যাই হোক না কেন, তাদের লক্ষ্য অর্জনের সময় তারা কিছু সাধারণ পেইন পয়েন্টের মুখোমুখি হতে পারে। বিভ্রান্তিকর টেক্সট বা CTA (Call-to-Action) বাটন খুঁজে পাওয়া কঠিন হতে পারে যেমন BUY NOW বা ডেমোর অনুরোধ করার বাটন খুঁজে পেতে সমস্যা ইত্যাদি।
ওয়েবসাইট ভিজিটরদের লক্ষ্য অর্জন করতে না পারার ফলে আপনার ব্যবসার প্রতি ব্যবহারকারীর খারাপ অভিজ্ঞতা হয়। এর ফলে আপনার কনভার্শন হার কমে যেতে পারে। আপনার ভিজিটরদের পেইন পয়েন্ট সমস্যা সমাধানের জন্য হিটম্যাপ, গুগল অ্যানালাইসিস এবং ওয়েবসাইট সার্ভের মতো ভিজিটর আচরণ বিশ্লেষণ টুলের মাধ্যমে সংগ্রহ করা ডেটা ব্যবহার করুন। সব ধরনের ব্যবসার জন্য এটি প্রযোজ্য তা ইকমার্স, ভ্রমণ, SaaS, শিক্ষা, মিডিয়া এবং প্রকাশনা বা অন্য যেকোনও ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসার জন্যেই প্রযোজ্য।
২। বিদ্যমান ট্রাফিক থেকে আরও ভালো ROI পেতে
বেশিরভাগ অভিজ্ঞ অপ্টিমাইজাররা জানেন যে, ওয়েবসাইটে মানসম্পন্ন ট্র্যাফিক অর্জন করার খরচ বিশাল। A/B টেস্টিং আপনাকে আপনার বিদ্যমান ট্র্যাফিক থেকে সর্বাধিক সুবিধা নিতে এবং নতুন ট্র্যাফিক অর্জনের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় না করেই আপনাকে কনভার্শন বাড়াতে সহায়তা করে। A/B পরীক্ষা আপনাকে অনেক সময় উচ্চ ROI দিতে পারে, এমনকি আপনার ওয়েবসাইটের সামান্যতম পরিবর্তনের ফলে সামগ্রিক ব্যবসায়িক কনভার্শন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেতে পারে।
৩। ফেসবুক বিজ্ঞাপনে ভাল ফলাফল পেতে
ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়ার সময় বিজ্ঞাপনের একাধিক ভেরিয়েশন দেয়া যায়। কিছুদিন বিজ্ঞাপন চালানোর পরে যে ভেরিয়েশন থেকে ভাল ফলাফল আসে (সাইন আপ, টিকেট বিক্রি, ওয়েবসাইট কনভার্শন ইত্যাদি) সেই বিজ্ঞাপনের কন্টেন্ট (টেক্সট বা মিডিয়া) পরবর্তীতে লম্বা সময়ের জন্যে চালানো যেতে পারে।
৪। বাউন্স রেট কমাতে
আপনার ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা বিচার করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মেট্রিকগুলির মধ্যে একটি হল এর বাউন্স রেট ট্র্যাক করা । আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট বেশি হবার পিছনে অনেকগুলি কারণ থাকতে পারে, যেমন দরকারি তথ্য খুঁজে পেতে সমস্যা, আশানুরূপ তথ্য না পাওয়া, বিভ্রান্তিকর নেভিগেশন, অত্যধিক প্রযুক্তিগত শব্দের ব্যবহার ইত্যাদি।
যেহেতু ভিন্ন ভিন্ন ওয়েবসাইট ভিন্ন ভিন্ন পণ্য বা সেবা নিয়ে কাজ করে এবং শ্রোতাদের ভিন্নতা অনেক বেশি, তাই বাউন্স রেট কমানোর কোনো নির্দিষ্ট সমাধান নেই। যাইহোক, একটি A/B টেস্ট চালিয়ে এক এক ভাবে চেষ্টা করে যেতে হবে। A/B টেস্টের মাধ্যমে, আপনি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত এক একটি উপাদান পরিবর্তন করে পরীক্ষা চালিয়ে যেতে পারেন। এটি আপনাকে কেবল দর্শকদের পেইন পয়েন্টগুলি খুঁজে পেতে সহায়তা করে না তবে আপনার ওয়েবসাইটের দর্শকদের সামগ্রিক অভিজ্ঞতা ভাল করতে সাহায্য করে, তাদের আপনার সাইটে আরও বেশি সময় ব্যয় করতে এবং এমনকি একজন ক্রেতা হিসেবে রূপান্তর করতে সহায়তা করে।